আমার পরিচয় কবিতার মূলভাব জানতে চেয়ে দশম শ্রেণির অধিকাংশ শিক্ষার্থী ইন্টারনেট তথা গুগলে সার্চ দিয়ে থাকে। বর্তমানে যারা এসএসসি পরীক্ষার্থী, তাদের জন্য দশম শ্রেণির বাংলা বইয়ের প্রতিটি কবিতার মূলভাব জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরীক্ষা যেহেতু খুব কাছাকাছিতেই আছে, সেহেতু এই মূহর্তে সম্পূর্ণ কবিতা পড়া এবং তা শিখাও বেশ কষ্টসাধ্য। এর চেয়ে বড় কয়েকগুণ বেটার যে, সেই কবিতার মূলভাবটা ভালোভাবে পড়ে নেওয়া। তাহলেই ঐ কবিতা সম্পর্কে একটি ভালো আইডিয়া আয়ত্তে করতে পারবেন।
আরো জানুন: ভর্তির জন্য আবেদন করার নিয়ম
যাইহোক, আজকের আর্টিকেলে আমরা জাস্ট একটি মাত্র কবিতা তথা আমার পরিচয় কবিতার মূলভাব জানার চেষ্টা করবো। প্রথমে আমরা কবিতার মূলভাব জানবো এবং পরোক্ষণে এই কবিতা নিয়ে থাকা যত ধরনের প্রশ্ন কিংবা দ্বিধা আছে, সবগুলো ব্রেকডাউন করার চেষ্টা করবো। তাহলে চলুন, আলোচনা বিলম্ব না করে মূল অংশে প্রবেশ করা যাক।
আমার পরিচয় কবিতার মূলভাব
শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে আমার পরিচয় কবিতার মূলভাবটিকে গাঢ় সবুজ রঙ্গে নিম্নে উপস্থাপন করেছি। যাতে করে মূলভাবটি বোঝতে শিক্ষার্থীদের কোনো অসুবিধা না হয়। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমিও জানি যে, কোনো একটি গল্প, কবিতা বা উপন্যাসকে সংক্ষেপে এবং ভালোভাবে বোঝতে হলে সেটির মূলভাব জানা গুরুত্বপূর্ণ। আর তারই প্রেক্ষিতে আজকের আর্টিকেলে আমি দশম শ্রেণির আমার পরিচয় কবিতার মূলভাবটি এখানে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। যাইহোক, আর অন্য আলোচনা না করে চলুন জেনে নিই আমার পরিচয় কবিতার মূলভাবটি-
সৈয়দ শামসুল হক এই কবিতাতে তার পরিচয় ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। এখানে তিনি তার ব্যক্তির জীবনের পরিচয় ফুটিয়ে তোলার চাইতে অন্যান্য বিষয়ের প্রতি বেশি আলোকপাত করেছেন। তিনি নিজেকে বলতে নিজের দেশ সম্পর্কে যেমন বুঝিয়েছেন তেমনিভাবে এই দেশের বর্তমান অবস্থান কিভাবে পরিচয় পেয়েছে সে বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন। আমার পরিচয় কবিতায় খুবই খুব সুন্দর হবে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের কথা তুলে ধরেছেন এবং আমাদের এই জাতিসত্তা যেন আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন হয় সে বিষয়গুলো জানিয়ে দিয়েছেন।
এ জাতিকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলার জন্য অতীতের বিভিন্ন ইতিহাস এবং ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়েছে যাতে করে সেগুলোর ভিত্তিতে এবং সাংস্কৃতিক পটভূমির ভিত্তিতে একটি জাতি হিসেবে আমরা সঠিকভাবে সকল ধরনের বৈশিষ্ট্য বজায় রেখে চলতে পারি। এছাড়াও কবি নিজের আত্মপরিচয় প্রদান করতে গিয়ে বাঙালি জাতির যে অনেক পুরাতন ইতিহাস ঐতিহ্য রয়েছে সেগুলো এত সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন এত সুন্দর ভাবে সেই শব্দগুলো ব্যবহার করেছেন যাতে করে আমরা ব্যাখ্যা মাধ্যমে পুরোপুরি বিষয় সম্পর্কে অবগত হতে পারি।
তাই কবি এখানে চর্যাপদ থেকে শুরু করে আমাদের বর্তমান সময়ে যাবতীয় সমস্যা গুলোর কথা তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। বিশেষ করে বিভিন্ন ধরনের ইতিহাস তুলে ধরার ক্ষেত্রে আমাদের যে বিশেষ বিশেষ ঐতিহ্য রয়েছে সেগুলো ফুটে উঠেছে। সেই সাথে এখানে চর্যাপদ এর বিভিন্ন অসাম্প্রদায়িক চেতনা ফুটে ওঠার পাশাপাশি মুসলিম ধর্ম ও সাহিত্য সংস্কৃতির বিকাশ এবং এদেশের অতীতকালের শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে অনেক বিষয় উঠে এসেছে।
ব্রিটিশ শাসনামলে বিভিন্ন ধরনের আন্দোলন অথবা বিভিন্ন ব্যক্তিদের ত্যাগ স্বীকার এখানে আমরা পড়ার মাধ্যমে বুঝতে পারি। শুধু যে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের মধ্য দিয়ে আমাদের এই পরিচয় ফুটে উঠেছে তা নয় বরং শিল্প সংস্কৃতি ও সাহিত্যের মধ্য দিয়েও আমাদের পরিচয় অনেকাংশে বহন করছেন। তাই সেই দৃষ্টিকোণ থেকে বলতে পারে যে রবীন্দ্রনাথের বিশাল সৃষ্টি যেমন আমাদের মানবিক মূল্যবোধ সৃষ্টি করার ক্ষেত্রে কাজে দিয়েছে তেমনি ভাবে নজরুলের সমস্ত বিদ্রোহী চেতনাও আমাদের ভেতরে কোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার চেতনা জাগিয়েছেন।
তাছাড়া যুগে যুগে ব্রিটিশ শাসন আমল থেকে শুরু করে অন্যান্য শাসনামলে যে অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতি ঝাঁপিয়ে পড়েছে অথবা নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য চেষ্টা করেছে সে বিষয়গুলো তুলে ধরার মধ্য দিয়ে আমাদেরকে এটা জানানো হয়েছে যে অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবশ্যই প্রতিবাদ করতে হবে। তাই আমাদের সব সময় মুক্তির পথ দেখতে হবে এবং আমরা যদি আড়ষ্টতার মধ্যে থেকে যাই তাহলে আমাদের উন্নতি কখনোই সম্ভব হবে না। তাছাড়া মুক্তিযুদ্ধের যে অবদান আমরা দেখেছি তাতে করে আমরা এটা বুঝতে পারি যে বাঙালি জাতি যদি একত্রিত থাকে তাহলে কোন ধরনের অপশক্তি আমাদেরকে গ্রাস করতে পারবে না।
উপরের মার্ক করা পুরো আলোচনাটিই হলো আমার পরিচয় কবিতার মূলভাব। আশা করি মনোযোগ সহকারে পড়লে বোঝতে কোনো রকম সমস্যা হবে না। কিন্তু এটাও জানি যে, অনেকেরেই এটা বোঝতে সামান্য সমস্যা হতে পারে। ব্যাপার না, জাস্ট নিম্নে কমেন্ট করুন এবং যত দ্রুত সম্ভব আমি রিপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করবো।
আমার পরিচয় কবিতা নিয়ে শেষ কথা
দেখুন, এই আর্টিকেলে আমি শুধুমাত্র আমার পরিচয় কবিতার মূলভাব প্রকাশ করেছি বা তুলে ধরেছি। বস্তত, একজন এসএসসি পরীক্ষার্থী বা দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে শুধু নির্দিষ্ট একটি কবিতার মূলভাব শিখলে বা জানলেই হবে না। এর পাশাপাশি তাকে অবশ্যই বাংলা বইয়ে থাকা অন্য সকল কবিতার এবং গল্পের মূলভাবগুলা জানা অত্যন্ত জরুরি।
দীর্ঘদিন ধরে আমরা বাংলা বইয়ে থাকা গল্প ও কবিতাগুলো বিস্তারিত পড়েছি, কিন্তু একদম শেষ সময়ে এসে আমাদের উচিত সকল গল্প এবং কবিতার মূলভাবগুলো সংক্ষেপে জেনে নেওয়া। তাহলে আমাদের একটা ধারণা তৈরি হবে আমাদের পাঠ্য বই সম্পর্কে।
যাইহোক, আজকের আলোচনা আর লম্বা করবো না। আশা করি উল্লেখিত মূলভাবটি পড়ে আপনারা বেশ ভালোভাবে উপকৃত হতে পেরেছেন। তারপরও যদি আপনাদের কোনো অংশ বোঝতে অসুবিধা হয়, তাহলে নিম্নে কমেন্ট করুন।
আমি ইকরামুল হক। শুধু মাত্র নিজের প্যাশনেট থেকে ব্লগিং করছি। চেষ্টা করি প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে এবং সেই সাথে আপনাদের সাথে শেয়ার করতে। তারই ধারাবাহিকতায়, প্রতিনিয়ত আমার লিখনী প্রকাশ করছি দূরভাষে। সো, স্টে উইথ মি এন্ড নো মোর এন্ড গ্রো ইউর নলেজ।